বাংলাদেশে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এসব আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। গত বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেন বাহিনীও তাদের প্রতিরোধ শুরু করে। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। এরই মধ্যে রাশিয়ার ওপর নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে থাকা রাশিয়ার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। রুশ ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন নিষেধাজ্ঞার খাঁড়ায়। ইতিমধ্যে এসব নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারে। বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। রাশিয়ার বেশ কয়েকটি ব্যাংককে বৈশ্বিক আন্তব্যাংক লেনদেনসংক্রান্ত সুইফট সিস্টেমে নিষিদ্ধ করার ফলে রাশিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি হুমকির মধ্যে পড়তে পারে। ফলে যেসব পোশাকের অর্ডার শিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত রয়েছে, তার মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
এই যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে পণ্যবাহী জাহাজের ভাড়া ও বিমা মাশুল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানির পুরোটাই এফওবি (ফ্রি অন বোর্ড) ভিত্তিতে করে থাকে।
তই পণ্য রপ্তানি ব্যয় বাড়বে না। তবে আমদানির বেশির ভাগই সিঅ্যান্ডএফ (কস্ট অ্যান্ড ফ্রেইট) ভিত্তিতে হয়। ফলে পণ্যবাহী জাহাজের ভাড়ার কারণে আমদানিকারকদের খরচ বেড়ে যাবে। এর প্রভাব পড়বে আমদানিকৃত পণ্যমূল্যে।
আমদানি ব্যয় বাড়বে, যা বাণিজ্য ঘাটতিও বাড়াবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে বাণিজ্য ঘাটতি ১ হাজার ৫৬১ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬৮৭ কোটি ডলার। বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের ওপর চাপ বেড়ে ডলারের বিপরীতে টাকার আরও দরপতন ঘটাতে পারে।
বিশ্ববাজারে গম রপ্তানির বড় অংশীদার রাশিয়া ও ইউক্রেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে চার লাখ টন গম আমদানি করেছে। আরও দেড় থেকে দুই লাখ টন গম আমদানির টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। রাশিয়া থেকে আমদানিতে অসুবিধা হলে বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে হবে। রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশ খুব বেশি গম আমদানি না করলেও বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতির কারণে সরবরাহে প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশ মূলত কাতার ও ওমান থেকে এলএনজি আমদানি করে থাকে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে কাতার, ওমান, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোর দিকে ঝুঁকতে পারে। এতে এই বাজারগুলোতে এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। রাশিয়ার বেশ কয়েকটি ব্যাংককে বৈশ্বিক আন্তব্যাংক লেনদেনসংক্রান্ত সুইফট সিস্টেমে নিষিদ্ধ করার ফলে রাশিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি হুমকির মধ্যে পড়তে পারে। ফলে যেসব পোশাকের অর্ডার শিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত রয়েছে, তার মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
إرسال تعليق